জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে হাতে হাত মিলিয়ে আমরা ইনসাফের বাংলাদেশ গড়ব। ভারতের পরিকল্পনা ও শেখ হাসিনা সরকারের নির্দেশে দেশের সব হত্যা হয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। গতকাল বুধবার প্রেসক্লাবের সামনে এক গণ-সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মাওলানা আব্দুল হালিম বলেন, গত পনেরো বছর আওয়ামী লীগ সরকার জামায়াতের অগণিত মানুষকে হত্যা ও গুম করেছে। অন্যায়ভাবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতৃবৃন্দদের ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করেছে। অন্যান্য রাজনৈতিক দলেরও বহু নেতাকর্মীদের হত্যা করেছে। শুধু তাই নয়, গত পনেরো বছরে দেশের মানুষ ঘরে-বাহিরে শান্তিতে ঘুমাতে পারেনি। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে দেশে ফেরত এনে বিচারকাজ সম্পন্ন করুন। জনগণের দাবি এখন শেখ হাসিনার বিচার করা।
সমাবেশের সভাপতিত্ব করেন জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির সহসভাপতি ও দলীয় মুখপাত্র রাশেদ প্রধান। তিনি বলেন, গত পনেরো বছর বাংলাদেশ রক্তের স্রোতের উপর পরিচালিত হয়েছে। একটি দানবীয় স্বৈরশাসক বাংলাদেশকে গণহত্যা ও গুম-খুনের রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। আমরা সেই দানবীয় খুনি শেখ হাসিনার বিচার চাই। অবিলম্বে শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে বাংলাদেশে ফেরত এনে দ্রুত বিচার কাজ শেষ করতে হবে।
রাশেদ প্রধান আরো বলেন, পিলখানা গণহত্যা, ২৮ অক্টোবর গণহত্যা, শাপলা চত্বরে গণহত্যা এবং বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র জনতাকে গণহত্যার হুকুমদাতা হিসেবে শেখ হাসিনার বিচার আন্তর্জাতিক আদালতে হতে হবে। সকল গণহত্যার দায়ে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। তাহলেই আগামীর বাংলাদেশ হবে শান্তি প্রিয় বাংলাদেশ।
এদিকে, গতকাল বুধবার চট্টগ্রামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শহীদ ফয়সাল আহমেদ শান্ত ও শহীদ ওমর ফারুকের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তিনি। একই সঙ্গে তিনি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আহতদের দেখতে যান। এ সময় উপস্থিত জনতার উদ্দেশ্যে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আপনাদের ছেলেরা একেকজন দ্বীনদার, সৎ, মেধাবি ও চরিত্রবান ছিলেন। আল্লাহ তায়ালা জীবন দেয়া-নেয়ার মালিক। এখানে চিরস্থায়ী থাকার সুযোগ নেই। তারা যে কাজে শহীদ হয়েছে আমরা দোয়া করি আল্লাহ যেন তাদেরকে কবুল করেন। এর আগে গতকাল বুধবার সকাল ৮টায় চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান। এ সময় জামায়াতের নেতাকর্মী তাকে শুভেচ্ছা জানান। এরপর সাড়ে ৯টায় তিনি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহতদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে দেখতে যান। তিনি তাদের চিকিৎসার খোঁজখবর নেন।
